অতি বৃহৎ যেমন গ্যালাক্সী এবং অতিক্ষুদ্র যেমন ইলেকট্রন সরাসরি পর্যবেক্ষন যোগ্য নয়, আর এখানেই তাত্ত্বিক পদার্থ বিজ্ঞানের জন্ম যেখানে জানা জ্ঞানের মাধ্যমে অজানাকে পর্যবেক্ষন করা হয়। ঈশ্বর প্রশ্নে নানা বৈজ্ঞানিক মতবাদ আছে যার অধীন তত্ত্ব গুলো পর্যবেক্ষণে মিলে গেলেও সে গুলি অন্য কোন না কোন তত্ত্বের সাথে সাংঘর্ষিক! ঈশ্বর প্রশ্নে বর্তমানে সবচেয়ে জনপ্রিয় মতবাদ হল বিগ ব়্যাং, মুলত মোল্লা স্টিফেন হকিং এর প্রধান পুরোহিত হিসেবে আবির্ভূত হবার পর থেকেই বিগ ব্যাং এর জনপ্রিয়তা উর্ধ মুখী! বিগ ব্যাং মুলত মহাবিশ্বের সৃষ্টি তত্ত্ব কিন্তু এই সৃষ্টি প্রশ্নেই ঈশ্বরের ভূমিকা চলে আসে। ডাঃ জাকির নায়েক সহ আরও অনেক ধর্মীয় বুদ্ধিজীবিদের আলোচনায় ঈশ্বরের অস্তিত্বের স্বপক্ষে বিগ ব্যাং তত্ত্ব ব্যবহার করতে দেখেছি আবার নাস্তিকদের আলোচনা একই তত্ত্ব বিপরীত কারণে ব্যবহার করতে দেখেছি। বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হিসাবে বিগ ব্যাং মহাবিশ্বের সৃষ্টি তত্ত্ব হলেও আমরা ঈশ্বর প্রশ্নে সবচেয়ে বেশী ব্যবহার করি এই তত্ত্ব!
সব মতবাদের মতই বিগ ব্যাং মতবাদেও চলক আছে যা অন্য তত্ত্বের মাধমে অনুমিত মান বিগ ব্যাং এর পর্যবেক্ষনের সাথে মিলে যায় কিন্তু তাতে কিছু সমস্যা আছে যার কোন উত্তর এখনও জানা নাই!
যেমনঃ
1় বিগ ব্যাং বিশ্বাস করলে আপনাকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে আপনার বাড়ী রাতে যত বড় ছিল সকালে তার চেয়ে বড় সন্ধায় তারচেয়ে আরো বড় এমনি ভাবে নিরন্তর বেড়ে চলেছে আপনার দেহ, চেয়ার টেবিল সব কিছু মহাবিশ্ব সম্প্রসারনের সমান হারে৷
2় কোয়ান্টাম মেকানিক্স বিশ্বাস করলে আপনাকে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে যে আমাদের চারপাশের কোন কিছুই বাস্তব নয়, এগুলোর অস্তিত্ব পর্যবেক্ষকের কারনে, পর্যবেক্ষক যখন দেখে না সেটা তখন সেখানে থাকে না৷ বিগ ব্যাং অনেক খানিই নির্ভরশীল কোয়ান্টাম ফিজিক্স এর মতবাদের উপর!
3় বিগ ব্যাং বিশ্বাস করলে অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে সময়ের একটা সুনির্দিষ্ট শুরু আছে কিন্তুু এই শুরুর সময় কে নির্ধারণ করল সেটা অজ্ঞাত, কেন যখন বিগ ব্যাং বা সময় শুরু হল তার আগে পরে কেন হল না তা অমিমাংসিত, যখন কিছুই ছিল না তখন বিগ ব্যাং হলো কোথায় তাও অজানা!
সর্বপরি ঈশ্বর প্রশ্নের বৈজ্ঞানিক উত্তর পাওয়া সম্ভব কিনা তা অমিমাংসিত রেখেও বৈজ্ঞানিক সিদ্ধান্তে আসা যায় যে ঈশ্বর প্রশ্নের সমাধানে আমাদের বিজ্ঞান এখনও সক্ষম নয়৷ তাই বৈজ্ঞানিক ভাবে এখন পযর্ন্ত নাস্তিক হবার কোন সূযোগ নাই, ঈশ্বরের অস্তিত্ব বা অনস্তিত্ত্ব কোনটাই এখনও বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের পরিধির মধ্যে নাই তাই বিশ্বাসই শেষ আশ্রয়! উপরন্তু বিগ ব্যাং এর অনুমানে কিছু পরিবর্তন আনলে বরং তা ঈশ্বরের অস্তিত্বের সপক্ষে একটা প্রমান হতে পারে যেমন, ঈশ্বর যখন 'হও' বলেছে তখন বিগ ব্যাং হয়েছে আর ঈশ্বরের নিয়মই বৈজ্ঞানিক সূত্র৷
মোল্লা হকিং এর ঈশ্বর বিষয়ক কিছু বয়ানে তথাকথিত নাস্তিকেরা খুবই উল্লসিত, কিন্তু আমি আতংকিত কেয়ামতের ভয়ে! সাম্প্রতিক ব্ল্যাক হোল বিষয়ক আবিষ্কারে সামান্য কিছু রদ বদল ঘটালে হাশরের মাঠের সাথে ব্ল্যাকহোল হুবহু মিলে যায়, দুটোই ওয়ান ওয়ে সেখান থেকে ফিরে আসার উপায় নাই এবং বর্তমান মহাজগত থেকে সেখানে ভীন্ন নিয়ম৷
No comments:
Post a Comment